নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি, ৫ই জুলাই —দীর্ঘ টালবাহানার পর বীরভূম জেলায় ভোট হবে ২২শে জুলাই। একদম ভরা বর্ষায়। সেই সময় আমন রোয়া পুরদমে চলবে। কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন চাষের কাজে। বন্যার আশঙ্কাতো আছেই। এরই মধ্যে হবে পঞ্চায়েতের ভোট। এছাড়াও তৃণমূলীদের বাইকবাহিনীর দাপাদাপি, সন্ত্রাস, হুমকি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড় করিয়েছে। আর এসব উপেক্ষা করেই চলছে নির্বাচনী প্রচারের কাজ। চাষের কাজের ফাঁকে ফাঁকে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কার্যত প্রহসন করতে শাসক দল গোড়া থেকেই জোর দখলের রাজনীতি শুরু করে। নীরব ছিল রাজ্য সরকার। ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রথমেই অনেকগুলি আসন সন্ত্রাস করে দখল করে নেয়। বীরভূম জেলাতেও তার প্রভাব পড়ে। নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে বার বার আবেদন নিবেদন করে কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়ে কোন ভূমিকা গ্রহণ করেনি পুলিস প্রশাসন। সুযোগ নেয় শাসক তৃণমূল। বিরোধীরা যাতে ভোটে অংশগ্রহণ করতে না পারে তার জন্য বিরোধী প্রার্থীদের হুমকি মারধর, খুন, সন্ত্রাস করে নির্বাচনী প্রক্রিয়াটাকে তামাশায় পরিণত করতে চায়। ফলে তৃণমূলীদের ব্যাপক সন্ত্রাসের কারণে বীরভূম জেলার বোলপুর মহকুমার নানুর, লাভপুর, বোলপুর-শ্রীনিকেতন, ইলামবাজার ও সিউড়ি মহকুমার দুবরাজপুর, খয়েরশোল, সিউড়ি-২নং ব্লকগুলিতে বামপন্থী প্রার্থীদের উপর চরম সন্ত্রাস, আক্রমণ, বাড়িঘর লুঠপাট, প্রার্থীদের অপহরণ এমনকি খুন করতেও দ্বিধা করেনি। ফলে ৫টি ব্লকে বিরোধী শূন্য মনোনয়নে। এই রকম পরিস্থিতিতে জেলার বাকি ব্লকগুলিতে নির্বাচন হবে। জেলার কৃষকরা ভেবেছিলেন ৯ই জুলাই ভোট শেষ হয়ে যাবে, আমরা নিশ্চিন্তে চাষের কাজ করতে পারবো। কিন্তু এবার যখন ভোট হবে তখন ভরপুর চাষের কাজে ব্যস্ত থাকবেন কৃষকরা।
আসলে তৃণমূল কোনদিনই কৃষকের কথা ভাবে না। এদের আসল চরিত্র প্রকাশ হয়ে গেছে মানুষের কাছে। যেনতেন প্রকারে ভোটে জিততে মরিয়া তৃণমূলীরা। তাঁদের আরো অভিযোগ, মাঠে বীজতলা তৈরির কাজ শেষ। বৃষ্টি ভাল হলেই চাষ শুরু হয়ে যাবে। গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে আমাদের যতই অসুবিধা হোক এই লড়াইয়ে এক ইঞ্চি মাটি ছেড়ে দেবো না।
চলছে গ্রামে গ্রামে নির্বাচনী প্রচার। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, তৃণমূলের বাইকবাহিনী এখনো সমান তালে এলাকায় এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। কি করে বিনা অনুমতিতে ১৫০/২০০ বাইকে তৃণমূলের পতাকা বেঁধে গ্রামের পর গ্রাম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। অবিলম্বে এই বাইক বাহিনীর সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে নির্বাচন কমিশনারকে।
জেলা বামফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, তৃণমূল এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। অনেক জায়গায় বিরোধীদের প্রচারে বাধা দিচ্ছে। প্রশাসনকে জরুরী ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনীকে এলাকায় মোতায়েন করতে হবে। এই মুহূর্তে বীরভূম জেলার সমস্ত বুথই অতিস্পর্শকাতর। সমস্ত বুথেই সশস্ত্র নিরাপত্তাবাহিনী দিতে হবে। ভোটাররা যেন নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন, তার ব্যবস্থাও করতে হবে।
- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43239#sthash.DCj6HGN2.dpuf
No comments:
Post a Comment