Saturday, July 6, 2013

Nod to privatise Kolkata and Chennai airports | Business Standard

Nod to privatise Kolkata and Chennai airports | Business Standard

KOLKATA: Seven-year-old Supriya, the otherwise happy-go-lucky girl of a police officer, had started behaving abnormally all of a sudden. She would sit in one corner of the classroom, stare at the blackboard and wouldn't interact with others. Teachers found this strange and started probing with the help of a counselor. They were shocked with what they found. While preparing for school, she was being sexually abused by her father every morning. Her mother had left home after am argument with her father. He would insist on bathing the girl and then abuse her sexually inside the bathroom and yet again while dressing her for school. Scared and extremely nervous, the girl finally broke down in front of the teachers. - The Times of India

For kids, danger lurks in backyard - The Times of India

Security - or the lack of it - holds the key to the West Bengal panchayat polls. It was not surprising that it led a huge legal battle. While the state held out as long as it could on its demand for deploying the state police, the state election commission pressed for central forces.- Hindustan Times

Security a red or green herring? - Hindustan Times

A youth alleged that three police officials beat him up and urinated on his face when he sought their help while trying to escape from a gang of miscreants. - Indian Express

Kolkata: Youth claims cops urinated on his face - Indian Express

Did TMC provoke battles with state EC to snatch panchayat seats uncontested? - Hindustan Times

Did TMC provoke battles with state EC to snatch panchayat seats uncontested? - Hindustan Times

Panchayat polls: High court prods West Bengal govt on candidates’ security - The Times of India

Panchayat polls: High court prods West Bengal govt on candidates’ security - The Times of India

Calcutta High Court to monitor CID probe into Kamduni rape case - India - DNA

Calcutta High Court to monitor CID probe into Kamduni rape case - India - DNA

A disabled 16-year-old girl was allegedly raped on Friday in West Bengal's Murshidabad ditrict. The son of a Trinamool Congress (TMC) couple was arrested in connection to the incident.- Hindustan Times

Physically challenged minor raped in West Bengal - Hindustan Times

The love story of E. Ilavarasan and N. Divya may have reached a tragic end with the Dalit youth’s death, but his mortal remains are yet to be interred peacefully. A Division Bench of Madras High Court on Friday directed the authorities to preserve Ilavarasan’s body so that a second autopsy, if needed, could be done. Another Bench directed the police to provide sufficient security to Divya, her mother and her brother.

Preserve Ilavarasan’s body, says High Court - The Hindu

Member of the National Commission for Scheduled Castes (NCSC), M. Shivanna of Karnataka, will visit Dharmapuri town in Tamil Nadu on Saturday, to probe into the death of Dalit boy E. Ilavarasan, whose body was found near a railway track on Thursday afternoon, and submit a report to the Commission.

Ilavasaran’s death: Scheduled Caste panel member to visit Dharmapuri tomorrow - The Hindu

E. Ilavarasan has killed himself, brutally underscoring the continuing tragedy of young married couples being wrenched apart by caste and political pressures. Indeed, India’s veneer of modernity comes apart each time an inter-caste marriage breaks. And when one half of the couple is Dalit, as in this case, mob fury comes as an inheritance.

Killing love with violence and politics - The Hindu

dna edit: We failed Ilavarasan - Analysis - DNA

dna edit: We failed Ilavarasan - Analysis - DNA

HIND MOTOR: আজও স্মৃতিতে অমলিন সেই রক্তঝরা দিন হিন্দমোটরের শ্রমিকের রক্তস্নাত ৭ই জুলাই, ১৯৭৩ স্মরণে

জ্যোতিকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়

গত ১৩ই মে, ২০১১ থেকে রাজ্যে এসেছে তথাকথিত ‘পরিবর্তন’। ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকার এখন স্মরণীয় ইতিহাস। ‘বদলা নয় — বদল চাই’ স্লোগানের ভাঁওতার আড়ালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর অতিক্রান্ত হয়েছে দু’বছর। এই দু’বছরেই পরিবর্তনের বাংলাতে বামপন্থী কর্মীদের শহীদ হবার তালিকা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। কৃষি সঙ্কটে, ফসলের দাম না পেয়ে এখনও পর্যন্ত ৮৫ জনের বেশি কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন। সব থেকে আক্রান্ত সর্বস্তরের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও নারীর মর্যাদা। ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো’-র তথ্য অনুযায়ী নারী নির্যাতনে পশ্চিমবাংলা গোটা দেশের শীর্ষে উঠে এসেছে। এ লজ্জা আমরা রাখবো কোথায়! তৃণমূল দল ও তাদের পরিচালিত রাজ্য সরকারের ভূমিকার কারণে পঞ্চায়েত নির্বাচনও পৌঁছেছে এক জটিল আবর্তের গহ্বরে। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জুলাই মাসে পাঁচ দফাতে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবার কথা। ঘোর বর্ষা ও রমজান মাসে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য দায়ী রাজ্যের তৃণমূল সরকারই। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই তারা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সব সময় উপেক্ষা করেছে ও অযথা কালক্ষেপ করেছে। বর্তমান সময়ের সঙ্গে কি আশ্চর্য মিল গত শতাব্দীর সন্ত্রাস কবলিত কুখ্যাত সত্তর দশকের। এ যেন অতীতের আয়নায় বর্তমানকে ফিরে দেখা।

সেদিনও ছিল এমন সন্ত্রাস কবলিত রক্তঝরা দিন। গত শতকের সেই কালো অন্ধকারময় সত্তরের দশক। ১৯৭২ সালের কুখ্যাত জালিয়াতি নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে পদদলিত করে রাজ্যে ক্ষমতায় আসীন ‘রিগিং মাস্টার’ প্রয়াত সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের নেতৃত্বে কংগ্রেসের সরকার। মানুষের কথা বলার অধিকারও কার্যত নেই। রাজ্যজুড়ে চলছে আধা ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাস। এক দমবন্ধ করা পরিবেশ। বামপন্থী কর্মীরা খুন হচ্ছেন। তাঁদের জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে মিথ্যা মামলায়। হাজার হাজার সি পি আই (এম) সংগঠক, কর্মী ও সমর্থকরা ঘরছাড়া, এলাকাছাড়া। ‘ইন্দিরা গান্ধী যুগ যুগ জীও’ স্লোগান দিয়ে দখল হয়ে যাচ্ছে কলেজের ছাত্র সংসদ থেকে কারখানাতে ট্রেড ইউনিয়ন অফিস। বর্তমানে যা চলছে রাজ্যে — সেদিন ছিল ঠিক তেমনই অন্ধকার সময়।

তখন পৌর এলাকা বা শহরাঞ্চলে বিধিবদ্ধ বা পূর্ণ রেশনিং এলাকায় রেশনের নামে সরবরাহ করা নামমাত্র অখাদ্য-কুখাদ্যই ছিল জনগণের সম্বল বা ভরসা। তখন সরকার চালু করেছিলেন চালের ‘কর্ডনিং’ ব্যবস্থা। গ্রামাঞ্চল থেকে চাল আনা ছিল আইনি মতেই নিষিদ্ধ কাজ। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়েও নিতান্ত পেটের দায়ে এই নিষিদ্ধ কাজই করতেন গরিব শ্রমজীবী মানুষেরা। একাজে যুক্ত থাকতেন বাস্তুহারা কলোনির গরিব মহিলারাও। তথাকথিত বেআইনি পথে এঁদের আনা চালই তখন অন্নের প্রধান ভরসা জোগাতো কলকাতা ও মফস্বল শহরাঞ্চলের নাগরিকদের। কারণ রেশনে সরবরাহ করা সাপ্তাহিক বরাদ্দের চালে একজন ব্যক্তির সাধারণভাবে সাতদিন চলতো না। আর বেশিরভাগ সময় রেশনের চাল থাকতো মানুষের খাবার অযোগ্য। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার পরিবেশও তখন ছিল না। চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের বিখ্যাত ছবি ‘কলকাতা-৭১’-এ এই অবস্থার বর্ণনা তুলে ধরা আছে।

১৯৭৩ সালের ৭ই জুলাই। হিন্দমোটর কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের সেদিন বেতন হয়েছে। দুপুরে প্রথম শিফটের ছুটির পর হিন্দমোটর রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে তখন শ্রমিক-কর্মচারীদের থিকথিকে ভিড়। কারখানার শ্রমিকদের চোখের সামনে তদানীন্তন কংগ্রেস সরকারের সশস্ত্র পুলিসবাহিনী অসহায় নিরস্ত্র মহিলা চাল বিক্রেতা (পুলিসের ভাষায় চালের চোরাকারবারী!) মা-বোনেদের সম্ভ্রম ও ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু করতেই প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল সেদিনের শ্রমিকশ্রেণী। বেপরোয়া পুলিসবাহিনী অবস্থার মোকাবিলা করার জন্য একতরফাভাবে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা শুরু করে। পুলিসের গুলিতে হিন্দমোটরের চারজন শ্রমিক প্রাণ হারান। তদানীন্তন কংগ্রেস সরকারের বর্বরতার শিকার হন হিন্দমোটর কারখানার শ্রমিকরা। গরিব ঘরের মহিলাদের পুলিসের হাতে ইজ্জত ও সম্ভ্রমহানি হতে দেখে প্রতিবাদ করার ফল মেলে হাতে হাতে। পুলিসের গুলিতে শহীদের মৃত্যুবরণ করেন হিন্দমোটর কারখানার তারাপদ মণ্ডল, পুরুষোত্তম সাউ, এনায়েত বসির ও দিলীপ লাহা। পুলিসের নির্মম গুলি শ্রমিকশ্রেণীর জাত ধর্ম ভাষা ও সমস্তরকম ভেদাভেদকে মুছে দেয়। কারণ নিহত চারজনের মধ্যে উল্লিখিত প্রথম তিনজন ছিলেন সি আই টি ইউ অনুমোদিত হিন্দুস্তান মোটরস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সদস্য এবং শেষোক্ত জন যুক্ত ছিলেন আই এন টি ইউ সি-র সাথে। এছাড়াও পুলিসের গুলি চালনায় সেদিন গুরুতর আহত হয়েছিলেন হিন্দমোটরের ফাউন্ড্রির শ্রমিক এস এন পাল।

নারীর সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে পুলিসের গুলিতে শ্রমিকশ্রেণীর আত্মবলিদানের এই ঘটনা সেদিনের রাজ্যের দমবন্ধ করা আধা ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসকে ভেঙে দিয়ে গর্জে ওঠার সাহস জোগাতে সাহায্য করে। সেদিন টেলি-মিডিয়া ছিল না, কিন্তু এই বর্বরোচিত নারকীয় ঘটনার সাথে সাথে ঐ দিনই হিন্দমোটর কারখানার সমস্ত শ্রমিক-কর্মচারীরা সি আই টি ইউ-র আহ্বানে কারখানাতে ধর্মঘট করেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন ৮ই জুলাই, ১৯৭৩ সমগ্র উত্তরপাড়া থানা এলাকায় বন্‌ধ এবং ৯ই জুলাই, ১৯৭৩ হুগলী জেলা বন্‌ধ ডাকে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), হুগলী জেলা কমিটি। কংগ্রেসী মস্তানবাহিনী ও পুলিসের জুলুম উপেক্ষা করে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়ায় ও বিক্ষোভ প্রতিবাদে বন্‌ধগুলি সফল হয়। ১৯৭২ সালের জালিয়াতি নির্বাচনের পর সারা রাজ্যের শ্বাসরোধকারী অবস্থার প্রতিবাদে, হিন্দমোটরে পুলিসের গুলিতে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার পরপরই ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) ও অন্যান্য বামপন্থী দলগুলির ডাকে ২৭শে জুলাই, ১৯৭৩ পালিত হয় বাংলা বন্‌ধ। হিন্দমোটরের শ্রমিকশ্রেণীর এই বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম সেদিন গোটা রাজ্যের গণ-আন্দোলনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

হিন্দমোটরে পুলিসের গুলি চালনার তদন্ত করতে জনগণের আন্দোলনের চাপে ও দাবিতে তদানীন্তন কংগ্রেস সরকার ‘বর্মণ কমিশন’ গঠন করতে বাধ্য হয়েছিল। তার আগে পুলিস হিন্দমোটর স্টেশন লাগোয়া বটতলা বাজার এলাকার স্থানীয় যুবকদের ও সাধারণ দোকানদারদের মিথ্যা অভিযোগে, তদানীন্তন কংগ্রেসী মস্তানবাহিনীর নির্দেশে, গ্রেপ্তার করেছিল। গ্রেপ্তার করেছিল সেই সময়ের সি পি আই (এম) এবং সি আই টি ইউ কর্মীদের। বর্মণ কমিশনে সাক্ষ্য দেবার জন্য যাঁরা প্রস্তুত হচ্ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সি আই টি ইউ‍‌ নেতা সন্তোষ দেব, মুকুল বৈশ্য, রবিকুমার পাল (কাল্টু), মনন চৌধুরী, দেবীপ্রসাদ বসুরায়, দিলীপ ঘোষ প্রমুখ। সাক্ষী দেওয়ার আগেই সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের পুলিসবাহিনী এঁদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। এই গ্রেপ্তারের পরিপ্রেক্ষিতে হিন্দুস্থান মোটরস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক ও তদানীন্তন সাংসদ কমরেড দীনেন ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছিলেন, ‘বর্মণ কমিশন’ প্রহসনে পরিণত হবে, তাই ঐ কমিশন বয়কট করা হয়।

পুলিসের গুলিতে শ্রমিকের শহীদ হওয়ার, গণ-আন্দোলনের এই ঐতিহাসিক ঘটনাবলীকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে সি আই টি ইউ অনুমোদিত হিন্দুস্থান মোটরস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের উদ্যোগে হিন্দমোটর রেল স্টেশনের পাশে বটতলা বাজারে ১৯৭৪ সালের ৭ই জুলাই নির্মাণ করা হয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। এই শহীদবেদী নির্মাণ করার সময়ও এলাকার কংগ্রেসী গুণ্ডাবাহিনী বাধা দিতে এসেছিল এবং শৈলেন চৌধুরী (বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর অন্যতম সংগঠক), কল্যাণব্রত পাল প্রমুখ সি পি আই (এম) কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। শহীদবেদী তৈরিতে বাধা দিচ্ছে কুখ্যাত কংগ্রেসী মস্তানের দল — এই খবর মুখে মুখে চাউর হতেই জনতা সরণিতে অবস্থিত হিন্দমোটর ইউনিয়ন অফিস (বর্তমান দীনেন স্মৃতি ভবন) থেকে তদানীন্তন সি আই টি ইউ নেতা সুনীল দেবসহ অন্যান্যরা দলে দলে বেদী নির্মাণস্থলে ছুটে আসেন। জড়ো হয়ে যান এলাকার সি পি আই (এম) কর্মীরাও। কংগ্রেসীদের বাধার মোকাবিলা করেই সেদিন নিহত শ্রমিকদের শহীদবেদীটি নির্মিত হয়। ১৯৭৪ সালের ৭ই জুলাই এই শহীদবেদীটি উদ্বোধন করেছিলেন প্রয়াত জননেতা কমরেড জ্যোতি বসু। গত ২০১০ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) কোতরং আঞ্চলিক কমিটি পুরানো শহীদবেদীটি সংস্কার করে নবরূপে তা নির্মাণ করে। প্রতিবছর সি আই টি ইউ এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র উদ্যোগে হিন্দমোটর কারখানার শ্রমিকদের রক্তস্নাত ৭ই জুলাই, ১৯৭৩ দিনটিকে স্মরণ করা হয় শহীদ স্মরণসভার মাধ্যমে।

এবছরও ৭ই জুলাই, ২০১৩, রবিবার বিকাল ৫টায় হিন্দমোটর স্টেশনের বটতলা বিদ্যাসাগর বাজার সংলগ্ন স্থানে শ্রমিকদের স্মরণে নির্মিত সেই ঐতিহাসিক শহীদবেদীর সামনে বিকাল ৫টায় রক্তস্নাত ৭ই জুলাইকে স্মরণ করা হবে স্মরণসভার মাধ্যমে। এই সভার মাধ্যমে গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের আধা ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসের কালো দিনগুলিকে স্মরণ করার পাশাপাশি অতীতের আয়নায় বর্তমানকেও আমরা ফিরে দেখতে চাই। অতীতের সেই কংগ্রেসের গর্ভজাত বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত পশ্চিমবাংলায় যে ভয়ানক দুর্বৃত্তরাজ, জুলুম, অত্যাচার, নারী নির্যাতন, খুন, ধর্ষণ, মিথ্যা মামলা, ছাত্র সংসদ দখল, ট্রেড ইউনিয়ন দখল, স্কুল কমিটি — সমবায় দখল, হাজার হাজার বামপন্থী কর্মীদের এলাকা ছাড়া করা ও জরিমানা দিতে বাধ্য করা, মানুষের সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা এবং তৃণমূলী রাজ্য সরকারের লাগামছাড়া কদর্য মিথ্যাচার ও জুলুম চলছে — আমরা তাকেও ধিক্কার জানাতে চাই। আমাদের বিশ্বাস — একজন সংবেদনশীল গণতন্ত্রপ্রিয় প্রতিবাদী মানুষ হিসাবে আমরা আপনাকে পাশে পাবো। শ্রমিকের রক্তস্নাত ৭ই জুলাই, ১৯৭৩ স্মরণে সমবেত হয়ে আসুন শপথ গ্রহণ করি, বর্তমান তৃণমূলী অপশাসনের বিরুদ্ধে মানুষের সংঘবদ্ধ প্রতিবাদই হোক এই দমবন্ধ করা সময় থেকে বের হবার রাস্তা। কারণ সংঘবদ্ধ মানুষই পারে সমস্ত অন্যায়কে রুখে দিতে।

- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43264#sthash.EnHlBvfA.dpuf

NATURAL GAS: অভ্যন্তরীণ প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ কার পক্ষে সরকার, দেশের না কর্পোরেট জগতের?

নিশীথ চৌধুরী


দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। ২৭শে জুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০১৪-র ১লা এপ্রিল থেকে দেশে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম হবে প্রতি মিলিয়ন বি টি ইউ প্রতি ৮.৪ ডলার, বর্তমানের দাম ৪.২ ডলারের একেবারে দ্বিগুণ। বিষয়টা নিয়ে যে তোলপাড় হবার কথা ছিল এখনও পর্যন্ত তা কিন্তু আমাদের নজরে আসেনি। আমাদের রাজ্যের বাণিজ্যিক সংবাদপত্রে সম্পাদকীয় তো দূরের কথা, খবরটা পর্যন্ত তেমন গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়নি।

সি পি আই (এম)এবংবামপন্থী দলগুলি মূল্যবৃদ্ধির সুদূরপ্রসারী ফলাফল সম্বন্ধে বেশ কয়েকবছর ধরেই ধারাবাহিকভাবে বলে আসছে। বাম সাংসদরা প্রধানমন্ত্রী তথা পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকে বারে বারে চিঠি দিয়েছেন। সংসদে এ বিষয়ে বক্তব্য রেখেছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে বামদলগুলির যৌথ বিবৃতিও নজরে এসেছে। গত ২রা জুলাই সাংসদ ও সি আই টি ইউ-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তপন সেন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সংসদের উভয় কক্ষে এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা চেয়েছেন।

প্রাক্‌ কথন

দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম কি হবে — বিষয়টা আলোচনায় আসতই না যদি না সরকারের উদার নীতির দাপটে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলন ও বিপণনের দরজা দেশী বিদেশী পূঁজিপতিদের জন্য খুলে দেওয়া হতো। এই সে দিন পর্যন্ত প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ও বিপণনের সমস্তটাই ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের অধীন। রাষ্ট্রায়ত্ত ONGC এবং Oil India ছিল গ্যাস খনন ও উৎপাদনের দায়িত্বে। ১৯৮৪ সালে ‘জাতীয় গ্যাস গ্রিড’ তৈরির মাধ্যমে দেশের সর্বত্র প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হলো GAIL । ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এই ব্যবস্থাই চলছিল। স্বাধীনতা লাভের পূর্ববর্তী সময়ে শুধুমাত্র আসাম ও গুজরাটে তৈল ও গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। ৬০এর দশকের শেষের দিকে বোম্বে হাই-এ গ্যাস ও তেল আবিষ্কৃত হয়, ৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে তার উত্তোলন শুরু হয়। এর পর ৮০-র দশকের মাঝামাঝি সময়ে বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী কৃষ্ণা-গোদাবরী বেসিনের ৫০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের বিরাট ভাণ্ডার খুঁজে পায় ONGC-র বিজ্ঞানীরা।

১৯৯০ সালের সালের প্রথম দিকে দেশে শুরু হলো অর্থনৈতিক সংস্কারের কর্মসূচী। গ্যাস উত্তোলনের ক্ষেত্র বেসরকারী বিনিয়োগের জন্য খুলে দেওয়া হলো। ১৯৯৯ সালে ভারত সরকার গ্রহণ করল New Exploration Licensing Plan বা NELP এবং প্রথম রাউন্ডেই KG বেসিন তুলে দেওয়া হলো রিলায়েন্সের হাতে। ২০০০ সালের এপ্রিল মাসে ভারত সরকার ও অবিভক্ত RIL-এর মধ্যে KG বেসিনের ৩৩৯.৪১ বর্গ কি‍‌লোমিটার জায়গা জুড়ে গ্যাস উত্তোলনের জন্য Production Sharing Contract স্বাক্ষর হলো। অনুরূপভাবে প্রায় একই সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আবিষ্কৃত ক্ষেত্রে কোল-বেড-মিথেন উত্তোলনের দায়িত্ব চলে গেল গ্রেট ইস্টার্ন এনার্জি কর্পোরেশন, এসার অয়েল এবং রিলায়েন্স গোষ্ঠীর হাতে। ইতোমধ্যে দামোদর বেসিন তথা দেশের আরও অনেক অঞ্চলে আবিষ্কৃত সেল-গ্যাস উত্তোলন ও বিপণনের দায়িত্বও দ্রুত কোনো কর্পোরেট হাউসের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

এই ক্ষেত্রে ব্যক্তিপুঁজির অনুপ্রবেশের ফলশ্রুতিতে শুরু হলো প্রাকৃতিক গ্যাসের দু-ধরনের দাম। KG বেসিন গ্যাসের উৎপাদন ও বিপণন শুরু হয় ২০০৯ সালে। এর আগে গ্যাসের মূল্য নির্ধারিত হতো প্রশাসনিক মূল্য পদ্ধতি (Administrative Price Mechanism বা APM) এর মাধ্যমে আসল উৎপাদন খরচ ও যুক্তিসঙ্গত মুনাফার হিসেব কষে। তখন প্রাকৃতিক গ্যাসের সরকার নির্ধারিত মূল্য ইউনিট (মিলিয়ান BTU) প্রতি ১.৮৩ ডলার দামে রাষ্ট্রায়ত সংস্থা ONGC’র মাধ্যমে বিপণন করা হতো। কিন্তু যুক্তিসঙ্গত মুনাফায় তো ঐ সমস্ত বৃহৎ পুঁজির তৃষ্ণা মেটাতে পারবে না। তাই সরকার নির্ধারিত দামের বাইরে সরকারই অনুমোদন দিল আরেক রকমের দামের, ইউনিট প্রতি ২.৩৪ ডলার এবং জুন ২০০৪ সালে RIL মিনিরত্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা NTPC-কে ২.৩৪ ডলারে পরবর্তী ১৭ বছর ধরে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বরাত পেল। রিলায়েন্স তখনও গ্যাস উৎপাদন শুরু করেনি। ২০০৬ সাল থেকেই তারা সরকারের কাছে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ৪.৩৩ ডলার করার জন্য তদবির তদারকি শুরু করে দিল, আর ৯—১০ মাসের প্রচেষ্টায় তারা সফলতাও পেল। ১২.০৯.২০০৭ তারিখে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন মন্ত্রীদের একটি গোষ্ঠী ঐ গ্যাসের মূল্য ইউনিট প্রতি ৪.২ ডলারের অনুমোদনও দিয়ে দিল। মনে রাখতে হবে তখন ’র গ্যাসের দাম ছিল ১.৮৩ ডলার। আরও আশ্চর্যের বিষয়, ২০০৭ সালে, KG বেসিন থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু হবার ২ বছর আগেই অস্বাভাবিক তৎপরতায় দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রিগোষ্ঠী রিলায়েন্সের আবদার মেনে নিল। এর পর ২০০৯ সালে কে জি বেসিনে গ্যাস উৎপাদন শুরু হবার কিছু সময়ের মধ্যেই আবার নতুন আবদার, এ দামে চলবে না, আন্তর্জাতিক বাজারে যে মূল্যে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) পাওয়া যায়, সেই দামের সমান মূল্য দেশে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্যও নির্ধারিত করতে হবে। এই দাবি স্বাভাবিক কারণেই পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস দপ্তরের তদানীন্তন ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী জয়পাল রেড্ডি অগ্রাহ্য করেন। শুরু হলো নানা ছলচাতুরি, গ্যাসের উৎপাদন তারা নানা অছিলায় কমাতে লাগল। যেখানে ২০১২-১৩ সালে গ্যাসের উৎপাদন হবার কথা দৈনিক ৮০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার তা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্যই যান্ত্রিক ত্রুটির দোহাই দিয়ে কমিয়ে আনা হয়েছে ১৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটারে। এতই ক্ষমতা তাদের যে দাবির প্রতি সহমত না হবার কারণে তারা মন্ত্রীও বদল করে দিতে পারে। সম্প্রতি ক্যাবিনেট বদলের সময় জয়পাল রেড্ডির দপ্তর বদল করা হলো। এটা সবাই বলছে রিলায়েন্সের বিরোধিতা করার মূল্য দিতে হলো তাঁকে।

রঙ্গরাজন কমিটির সুপারিশ ও সরকারের অবস্থান

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটির প্রধান ডঃ সি. রঙ্গরাজনের নেতৃত্বে অভ্যন্তরীণ গ্যাস উৎপাদনের জন্য ভবিষ্যৎ Production Sharing Contract-এর রূপরেখা এবং উৎপাদিত গ্যাসের মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতির বিষয়ে সুপারিশ করার জন্য গঠিত কমিটি তাদের রিপোর্ট পেশ করেছে এবং তা এ বছর জানুয়ারি মাসে ওয়েব সাইটে দিয়ে দেওয়াও হয়েছে। সুপারিশ যথারীতি রিলায়েন্সের অনুকূলেই গেছে এবং সরকারও অতি দ্রুততার সাথে মন্ত্রিসভার অভ্যন্তরীণ বিরোধ সহ সর্বস্তরের বিরোধিতাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সে সুপারিশ মেনে তা আগামী ১লা এপ্রিল ২০১৪ থেকে লাগু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল। এই মুহূর্তে দেশে APM গ্যাসের দাম স্থানভেদে ইউনিট পিছু ২.৫২ ডলার থেকে ৪.২ ডলার এবং Non APM গ্যাসের মূল্য ৪.২ থেকে ৫.২৫ ডলার। ১লা এপ্রিল ২০১৪ থেকে আর দু ধরনের দাম থাকবে না, সব গ্যাসের দাম হবে সমান, ইউনিট পিছু ৮.৪ ডলার।

এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলশ্রুতিতে কি ঘটতে চলেছে? দিল্লির খবরের কাগজেই এসেছে ক্যাবিনেট মিটিং-এ সার ও বিদ্যুৎমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে গ্যাসের মূল্য ৮.৪ ডলার করার ফলে ইউরিয়া সারের উৎপাদন খরচ বাড়বে টন পিছু ৬০০০ টাকা আর বিদ্যুতের দাম বাড়বে ইউনিট পিছু ২ টাকা হারে। দাম বাড়বে রান্নার গ্যাসের এবং CNG-র ফলশ্রুতিতে রান্নাঘরে আগুন আর বর্ধিত পরিবহন খরচ। আর এ সবের সামগ্রিক ফল একটাই-যাবতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি।

সরকারের যুক্তি অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ টানতে অভ্যন্তরীণ গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধি সাহায্য করবে এবং কালক্রমে অভ্যন্তরীণ গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG)’র আমদানি কমে আসবে। দুর্ভাগ্যক্রমে এ যুক্তির পুরোটাই অসার। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে দেশে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ইউনিট পিছু ১.৭৯ ডলার থেকে ৩০০ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫.২৫ ডলার। কই, নতুন কোন বিনিয়োগ আসেনি তো? সাংসদ তপন সেন তাঁর প্রধানমন্ত্রীকে লেখা সাম্প্রতিক চিঠিতে সঠিকভাবেই বলেছেন দেশে পেট্রোলিয়াম ক্ষেত্রে ইমপোর্ট প্যারিটি প্রাইস চলছে দীর্ঘদিন ধরে কিন্তু এর ফলে না বেড়েছে অভ্যন্তরীণ খনিজ তেলের উৎপাদন, না এসেছে কোন বিদেশী বিনিয়োগ। তা হলে গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধিতে বিনিয়োগ আসবে তার গ্যারেন্টিই বা কোথায়?

সরকার আরও যুক্তি দিয়েছে যে, গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধির বেশির ভাগ সুবিধাটাই পা‍‌বে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র কারণ বর্তমানে গ্যাস উৎপাদনের দুই-তৃতীয়াংশই রাষ্ট্রায়ত্ত ONGC এবং Oil India’র অধীন। আবার একটা অসার যুক্তি। মনে রাখতে হবে গ্যাসের উপভোক্তাওতো প্রধানত রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র। একটা হিসাব বলছে (Frontline পত্রিকার ২৬শে জুন সংখ্যায় C P Chandrasekhar-এর লেখা প্রবন্ধ) ইউনিট পিছু ১ ডলার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের বর্তমান ইউরিয়া উৎপাদনের খরচ বাড়বে বাৎসরিক ৩০০০ থেকে ৪০০০ কোটি টাকা আর গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বাড়বে বাৎসরিক ১০ হাজার কোটি টাকা। এসব কারখানার অধিকাংশই তো রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে আর এর দাম তো বকলমে রাষ্ট্রকেই মেটাতে হবে। তা হলে কোথায় রইল রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের মুনাফা? মুনাফাতো করবে রিলায়েন্স ও অন্যান্য কর্পোরেট হাউস। New Exploration Licensing plan লাগু হবার পর থেকে কোন্‌ কর্পোরেট হাউস তেল বা গ্যাসের মুনাফার কত অংশ সরকারী কোষাগারে জমা করেছে এ হিসাব তো আজও সকলের অজানা।

তপন সেন তাঁর চিঠিতে আরও জানতে চেয়েছেন সরকার কি এমন একটা দেশের নাম করতে পারবে যেখানে অভ্যন্তরীণ উৎপাদিত গ্যাসের দাম ৮.৪ ডলার বা তার কাছাকাছি। সারা পৃথিবীতে এ এক বেনজির উদাহরণ। ভারতবর্ষে যেখানে এই দাম করা হচ্ছে প্রতি মিলিয়ান বি টি ইউ পিছু ৮.৪ ডলার সেখানে খোদ আমেরিকায় এর মূল্য ৩.৮ ডলার, ওমানে ২.২ ডলার, কাতারে ২.৫ ডলার, কানাডায় ৩.৮ ডলার, আবুধাবিতে ২.৩ ডলার, মালয়েশিয়ায় ৪ ডলার আর আমাদের প্রতিবেশী বাংলাদেশে তা ৩.৫ ডলার মাত্র। (উৎস: Outlook পত্রিকা জুলাই ৮, ২০১৩)।

বেসরকারী পুঁজির সেবায়

আর কোন ঢাকা-ঢুকি নেই, সরকারটা সরাসরি নেমে পড়েছে বেসরকারী পুঁজির সেবায়। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রেভিনিউ সচিব ই এ এস শর্মা সম্প্রতি বলেছেন, ‘এ তো খরচের সামাজিকীকরণ আর মুনাফার বেসরকারীকরণ’। আগেই বলা হয়েছে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়তে চলেছে সারের মূল্যে, বিদ্যুতের দামে আর রান্নার গ্যাস তথা পরিবহনে ব্যবহৃত CNG-তে। এ সবের মূল্য বর্তমানের অবস্থায় রাখতে গেলে শুধুমাত্র সার ও বিদ্যুতেই পরবর্তী ৫ বছরে অতিরিক্ত ভরতুকি দিতে হবে ৭১,২৫০ কোটি টাকা। এই সরকার যারা সর্বজনীন খাদ্য সুরক্ষার প্রশ্নে আর্থিক অনটনের দোহাই দেয়, তারাই রিলায়েন্সের মতো কর্পোরেট হাউসের মুনাফা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্রীয় কোষাগার খালি করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না।

জনগণের জন্য ভরতুকি কথাটাতো একটা অতি ঘৃণিত শব্দ। বর্তমান নীতির প্রকোপেই অদূর ভবিষ্যতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে ভরতুকি কমানোর কথা। সব দিক থেকেই বিপদে পড়বে সাধারণ মানুষ। কি হবে দেশের ৭৯ শতাংশের বেশি মানুষের যারা দৈনিক ২০ টাকাও খরচ করার সামর্থ্য রাখেন না?

সংবিধানের ২৯৭ ধারা অনুসারে দেশের অভ্যন্তরে মাটির তলায় অথবা আন্তর্জাতিক সীমারেখার অভ্যন্তরে সমুদ্রের তলায় খনিজ অবস্থায় থাকা প্রাকৃতিক গ্যাস সহ সব ধরনের পেট্রোলিয়াম পদার্থের মালিকানা ভারত সরকারের এবং তা দেশের প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হবে। গত ১লা জুলাই ২০১৩ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বামদলগুলির জাতীয় কনভেনশনের প্রস্তাবেও সমস্ত খনিজসম্পদের জাতীয়করণের দাবি স্বীকৃত হয়েছে। জনগণের সম্পত্তির এভাবে বেপরোয়া লুটের ব্যবস্থা পাকা করতে যে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও সরকার বদ্ধপরিকর তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া এই মুহূর্তে আর কোন বিকল্প নেই।
- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43263#sthash.4hpdlDe7.dpuf

MAMTA BANERJEE AND MEDIA: কোনও সংবাদমাধ্যমের মৃদু সমালোচনাও সহ্য করতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি চান সমস্ত সংবাদমাধ্যমই যেন তাঁর স্তাবকতা করে। সেই কারণেই চিট ফান্ডের অর্থের ওপর ভিত্তি করেই মুখ্যমন্ত্রী গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন বাংলার মিডিয়া সাম্রাজ্য। ক্ষমতায় আসার পর তিনি সেইসব তোষামুদে মিডিয়ার পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন সরকারী ক্ষমতা এবং অর্থকে ব্যবহার করে। প্রচলিত নিয়মকানুনের পরোয়া না করে মুখ্যমন্ত্রী সরকারী পাঠাগার থেকে প্রতিষ্ঠিত এবং বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রগুলিকে বাদ দিয়েছেন।

ফতোয়া নাকচ

কোনও সংবাদমাধ্যমের মৃদু সমালোচনাও সহ্য করতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি চান সমস্ত সংবাদমাধ্যমই যেন তাঁর স্তাবকতা করে। সেই কারণেই চিট ফান্ডের অর্থের ওপর ভিত্তি করেই মুখ্যমন্ত্রী গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন বাংলার মিডিয়া সাম্রাজ্য। ক্ষমতায় আসার পর তিনি সেইসব তোষামুদে মিডিয়ার পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন সরকারী ক্ষমতা এবং অর্থকে ব্যবহার করে। প্রচলিত নিয়মকানুনের পরোয়া না করে মুখ্যমন্ত্রী সরকারী পাঠাগার থেকে প্রতিষ্ঠিত এবং বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রগুলিকে বাদ দিয়েছেন। তার বদলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল শাসক দলের স্তাবক তথা চিট ফান্ডের অর্থে চলা সদ্য প্রকাশিত কয়েকটি সংবাদপত্র। কলকাতা হাইকোর্টও স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিয়েছে সরকারী পাঠাগারে বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রগুলিকে বাদ দেওয়ার কোনও এক্তিয়ার সরকারের নেই। সরকারকে অবিলম্বে এই আদেশ প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সরকার যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেআইনি পথে চলছে তার আরেকটি উদাহরণ হলো পাঠাগার সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের আদেশ। তৃণমূল পরিচালিত সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চাইছে। তৃণমূল কংগ্রেস সরকারী ক্ষমতাকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে সমালোচক সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে চায়। এজন্য প্রকাশ্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের নাম ধরে হুমকি দিতে পিছপা হন না মুখ্যমন্ত্রী নিজে। 

এই মুখ্যমন্ত্রীই রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সংবাদপত্রে রেলের অনুষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিয়েছেন কোটি কোটি টাকার। রেল মন্ত্রকের বিজ্ঞাপনের প্রভাবে সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করেছেন তাঁর ভাবমূর্তি তৈরিতে। বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত দু-একটি বাদে সব ব্যবসায়িক সংবাদমাধ্যমকেই নিজের পক্ষে রাখতে পেরেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল নেত্রী চেয়েছিলেন সরকার যাই করুক না কেন কোনও সংবাদমাধ্যমই তাঁর সমালোচনা করতে পারবে না। কিন্তু পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে ব্যবসায়িক সংবাদমাধ্যমও বাধ্য হয় সরকারের সমালোচনার পথে যেতে। সেই সময় থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর অসহিষ্ণুতার সূত্রপাত। সরকারী পাঠাগার থেকে মুখ্যমন্ত্রী বাদ দিয়েছিলেন তাঁর অপছন্দের সংবাদপত্রগুলিকে। তেমনই তিনি প্রকাশ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, কোন চ্যানেল দেখবেন আর কোন চ্যানেল দেখবেন না। রাজ্য সরকারের বিজ্ঞাপনের নীতি তিনি স্থির করেছেন সমর্থন বা সমালোচনার ভিত্তিতে। বিরোধী দলের মুখপত্র বলে গণশক্তির বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ২০১১ সালের মে মাস থেকে। গণশক্তি সম্পর্কে এই সরকারী নীতি সম্প্রতি সমালোচিত হয়েছে আদালতে। কোনও রকম তথ্য প্রমাণ ছাড়াই মুখ্যমন্ত্রী একজন সাংবাদিকের নাম করে তাঁকে খুনের চক্রান্তকারী বলে অভিযোগ এনেছেন। অথচ পুলিস রিপোর্টে তার কোন উল্লেখ মেলেনি। ভিত্তিহীন হুমকি দিয়ে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের মুখ বন্ধ রাখতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিক সম্মেলনে অস্বস্তিকর কোন প্রশ্নের জবাব দিতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। শাসক দলের মদতে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি হয়েছে। লক্ষ লক্ষ রাজ্যবাসী প্রতারিত হয়েছেন। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। খুন, অপহরণ, ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্কিত রাজ্যবাসী। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, কৃষক ঋণের দায়ে আত্মহত্যা করছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ছাত্র মারা গেছে পুলিস হেফাজতে। কিন্তু কোন সংবাদমাধ্যম এইসব সংবাদ প্রকাশ করলেই তার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করা হচ্ছে। যদিও আইনের আদালতে এবং মানুষের আদালতে এই ফতোয়া নাকচ হয়ে যাচ্ছে।

- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43261#sthash.FHL7zQMP.dpuf

বীরভূমে বিরোধীশূন্য ৫ ব্লক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাইক বাহিনী, বাধা প্রচারেও

নিজস্ব সংবাদদাতা


সিউড়ি, ৫ই জুলাই —দীর্ঘ টালবাহানার পর বীরভূম জেলায় ভোট হবে ২২শে জুলাই। একদম ভরা বর্ষায়। সেই সময় আমন রোয়া পুরদমে চলবে। কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন চাষের কাজে। বন্যার আশঙ্কাতো আছেই। এরই মধ্যে হবে পঞ্চায়েতের ভোট। এছাড়াও তৃণমূলীদের বাইকবাহিনীর দাপাদাপি, সন্ত্রাস, হুমকি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড় করিয়েছে। আর এসব উপেক্ষা করেই চলছে নির্বাচনী প্রচারের কাজ। চাষের কাজের ফাঁকে ফাঁকে।

পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কার্যত প্রহসন করতে শাসক দল গোড়া থেকেই জোর দখলের রাজনীতি শুরু করে। নীরব ছিল রাজ্য সরকার। ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রথমেই অনেকগুলি আসন সন্ত্রাস করে দখল করে নেয়। বীরভূম জেলাতেও তার প্রভাব পড়ে। নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে বার বার আবেদন নিবেদন করে কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়ে কোন ভূমিকা গ্রহণ করেনি পুলিস প্রশাসন। সুযোগ নেয় শাসক তৃণমূল। বিরোধীরা যাতে ভোটে অংশগ্রহণ করতে না পারে তার জন্য বিরোধী প্রার্থীদের হুমকি মারধর, খুন, সন্ত্রাস করে নির্বাচনী প্রক্রিয়াটাকে তামাশায় পরিণত করতে চায়। ফলে তৃণমূলীদের ব্যাপক সন্ত্রাসের কারণে বীরভূম জেলার বোলপুর মহকুমার নানুর, লাভপুর, বোলপুর-শ্রীনিকেতন, ইলামবাজার ও সিউড়ি মহকুমার দুবরাজপুর, খয়েরশোল, সিউড়ি-২নং ব্লকগুলিতে বামপন্থী‍‌ প্রার্থীদের উপর চরম সন্ত্রাস, আক্রমণ, বাড়িঘর লুঠপাট, প্রার্থীদের অপহরণ এমনকি খুন করতেও দ্বিধা করেনি। ফ‍‌লে ৫টি ব্লকে বিরোধী শূন্য মনোনয়নে। এই রকম পরিস্থিতিতে জেলার বাকি ব্লকগুলিতে নির্বাচন হবে। জেলার কৃষকরা ভেবেছিলেন ৯ই জুলাই ভোট শেষ হয়ে যাবে, আমরা নিশ্চিন্তে চাষের কাজ করতে পারবো। কিন্তু এবার যখন ভোট হবে তখন ভরপুর চাষের কাজে ব্যস্ত থাকবেন কৃষকরা।

আসলে তৃণমূল কোনদিনই কৃষকের কথা ভাবে না। এদের আসল চরিত্র প্রকাশ হয়ে গেছে মানুষের কাছে। যেনতেন প্রকারে ভোটে জিততে মরিয়া তৃণমূলীরা। তাঁদের আরো অভিযোগ, মাঠে বীজতলা তৈরির কাজ শেষ। বৃষ্টি ভাল হলেই চাষ শুরু হয়ে যাবে। গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে আমাদের যতই অসুবিধা হোক এই লড়াইয়ে এক ইঞ্চি মাটি ছেড়ে দেবো না।

চলছে গ্রামে গ্রামে নির্বাচনী প্রচার। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, তৃণমূলের বাইকবাহিনী এখনো সমান তালে এলাকায় এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। কি করে বিনা অনুমতিতে ১৫০/২০০ বাইকে তৃণমূলের পতাকা বেঁধে গ্রামের পর গ্রাম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। অবিলম্বে এই বাইক বাহিনীর সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে নির্বাচন কমিশনারকে।

জেলা বামফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, তৃণমূল এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। অনেক জায়গায় বিরোধীদের প্রচারে বাধা দিচ্ছে। প্রশাসনকে জরুরী ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনীকে এলাকায় মোতায়েন করতে হবে। এই মুহূর্তে বীরভূম জেলার সমস্ত বুথই অতিস্পর্শকাতর। সমস্ত বুথেই সশস্ত্র নিরাপত্তাবাহিনী দিতে হবে। ভোটাররা যেন নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন, তার ব্যবস্থাও করতে হবে।

- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43239#sthash.DCj6HGN2.dpuf

তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ মাথাভাঙায়

নিজস্ব সংবাদদাতা


কোচবিহার, ৫ই জুলাই — মাথাভাঙায় ফের ধর্ষণের অভি‍‌যোগ উঠলো এলাকার এক পরিচিত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর বিরুদ্ধে। কয়েকদিন আগে কুর্শামারিতে ধর্ষণের ঘটনার এখনও কোনো কিনারা না হতেই ধর্ষণের আর একটি থানায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সকালে পচাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন মাথাভাঙা শহর লাগোয়া গুয়াবাড়ি গ্রামে এ‍‌ই ঘটনা ঘটে। এদিন সকালে মুষলধারে বৃষ্টি হবার সময় গ্রামের এক মুসলিম বিধবা মহিলার (৪০) ঘরে ঢুকে পড়ে এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী বলে পরিচিত সলেমন মিঞা নামে এক যুবক। ওই মহিলার দুই সন্তান। একজন কাজের জন্য ভিনরাজ্যে থাকে। অন্যজন বাড়িতে ছিল না। এই সুযোগ নিয়েই ওই তৃণমূলী যুবক ওই মহিলার ঘরে ঢুকে পড়ে জোর করে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ওই মহিলা সলেমন মিঞার বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু তাকে বিকেল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেছে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি।
- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43245#sthash.e9hraU76.dpuf

ABTA: নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি

নিজস্ব প্রতিনিধি


কলকাতা, ৫ই জুলাই— রাজ্যজুড়ে ক্রমাগত বেড়ে চলা নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে ফের তীব্র প্রতিবাদ জানালেন শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীরা। শুক্রবার কলেজ স্ট্রিটে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ জানান তাঁরা। এদিন নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির কলকাতা জেলা কমিটির উদ্যোগে এই সভা হয়। সভায় কামদুনি, গেদেসহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় গত দু’বছর ধরে ঘটে চলা ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের তীব্র প্রতিবাদ করেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, প্রতিটি ঘটনাকেই তুচ্ছ ঘটনা বলে চিহ্নিত করে সম্পূর্ণ উদাসীন রাজ্য সরকার। একদিকে নারী নির্যাতন ও খুন, অন্যদিকে শিক্ষায় নৈরাজ্য, শিক্ষক-ছাত্র নিগ্রহ ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটে চলেছে অহরহ। কঠোর শাস্তি হওয়ার বদলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে দোষীরা। অবিলম্বে এই দোষীদের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। এই নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আরো ব্যাপক আকারে আন্দোলনে নামবেন শিক্ষক শিক্ষিকারা।

নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির এই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন চিন্ময়ী দে, মৃন্ময় রায়, প্রিয় নিয়োগী, বিপ্লব তিলক, জ্যোৎস্না রায়, ফরজুল ইমাম, রণজিৎ মজুমদার, লৎফুন আলম প্রমুখ শিক্ষক আন্দোলনের বিভিন্ন নেতৃত্ব। তাঁরা বলেন, পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডকে তুচ্ছ ঘটনা বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে দেখা গেল তা মোটেই তুচ্ছ নয়। নৃশংসতার সীমা ছাড়ালো কামদুনি। কলেজ ছাত্রী ধর্ষিতা ও খুন হয়ে গেল দুষ্কৃতীদের হাতে। গেদে, রানীতলাতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। কোনো হেলদোল নেই সরকারের। পুলিসও সরকারের কথামতোই চলছে। এবার প্রয়োজন সবাই মিলে একজোটে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে শামিল হওয়া। সেই পথেই এবার নেমেছেন রাজ্যের সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ।

এদিন নেতৃবৃন্দ বলেন, গত দু’বছর ধরে সন্ত্রাস তীব্র আকার নিয়েছে রাজ্যে। শিক্ষক নিগ্রহ ও হত্যা বেড়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা চলছে। খুনও করা হচ্ছে। মিত্র ইন্সটিটিউশনের শিক্ষক বরুণ বিশ্বাসকে এক বছর আগে ঠিক এভাবেই নিহত হতে হয়েছে দুষ্কৃতীদের হাতে। কামদুনির বাসিন্দাদের যাঁরা ধর্ষণ- হত্যার প্রতিবাদ করেছেন তাঁদের মাওবাদী আখ্যা পেতে হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা সেখানে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। এসবের বিরুদ্ধেই বারবার পথে নেমে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীরা। আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলনের পথে যাবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43244#sthash.5ErfMLwL.dpuf

KAMDUNI: বিচারের নামে প্রহসন, বড় আন্দোলনের পথে যাবে কামদুনি


নিজস্ব প্রতিনিধি


কামদুনি, ৫ই জুলাই— চার্জশিটের নামে সরকারের প্রহসনের বিরুদ্ধে ফের বড় আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কামদুনি। ইতোমধ্যে গ্রামের ভেতরেই একাধিক প্রতিবাদ কর্মসূচী নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। প্রায় প্রতিদিন মিছিল, বিক্ষোভ হচ্ছে। সরকারের অসম্পূর্ণ চার্জশিট ও আদালতে শুনানির দিন পিছিয়ে যাওয়া কামদুনির ক্ষোভের আগুনে যেন ঘি ঢেলেছে। গ্রামবাসীরা আলোচনা করেছেন, এবার আর শুধু গ্রামের ভেতরেই নয় প্রয়োজনে কলকাতাতে গিয়েই তাদের ক্ষোভ, দাবির কথা জানাবে কামদুনি।

শুক্রবারও কামদুনিতে ছিল ক্ষোভের উত্তাপ। এদিনও কামদুনির সেই নিহত ছাত্রীর ভাই প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেছেন, আমরা আর সি আই ডি’র ওপর ভরসা রাখছি না। সি বি আই চাই, একমাত্র সি বি আই তদন্ত করলেই গ্রামবাসীরা সাক্ষী দেবে। এমনকি এদিন কামদুনি গ্রামের বাসিন্দারা রীতিমতো ক্ষোভের সঙ্গেই অভিযোগ তুলেছেন, সরকার চার্জশিটে আনসারকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

এই পরিস্থিতিতেই শুক্রবার আইনজীবীদের সমাবেশ ভরসা যোগালো কামদুনির বাসিন্দাদের। বনগাঁ, বসিরহাট, বারাকপুর, বিধাননগর, বারাসত— উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন ব্লক থেকেই এদিন মহকুমা ও জেলা আদালতের আইনজীবীরা এসেছিলেন কামদুনি গ্রামে। ন্যায় বিচারের দাবিতে কামদুনির বাসিন্দাদের লড়াইয়ে সর্বতোভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। প্রায় চারশোজন আইনজীবীদের এই সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টেরও বিশিষ্ট আইনজীবীরা। কামদুনি স্কুল মাঠে সমবেত হওয়া গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। এখানে বক্তব্য রাখেন ভারতী মুৎসুদ্দি, নিশীথরঞ্জন অধিকারী, মিহির দাস। তার আগে কামদুনির ঘোষ পাড়ায় সেই নিহত ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা-মা ও ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন নিশীথ অধিকারী, ভারতী মুৎসুদ্দি, মনোজ কান্তি দে সহ আইনজীবীদের একটি দল। নিহত ছাত্রীর শোকাহত বাবা আইনজীবীদের সামনেই আক্ষেপ করেন এভাবে মেয়ের মৃত্যুর বিচার নিয়ে সরকারের ছেলেখেলা করার ঘটনায়। দাবি তোলেন সি বি আই তদন্তেরও।আইনজীবীরা কথা বলেন টুম্পা কয়াল, মৌসুমী কয়ালসহ গ্রামের মহিলাদের সঙ্গেও। তদন্ত নিয়ে তাঁদের ক্ষোভের কথা জানান আইনজীবীদের।

কামদুনি এখন কার্যত পুলিসী ঘেরাটোপে। কামদুনির বাসিন্দাদেরও পুলিস চৌকিতে নাম, ঠিকানা, পরিচয় পত্র দেখিয়েই গ্রামে ঢুকতে কিংবা বেরোতে হয়। সেই অবরুদ্ধ কামদুনিই এখন সরাসরি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে বাঁচানোর অভিযোগ তুলছে। 

কে এই আনসার? পুরো নাম আনসার আলি মোল্লা। কীর্তিপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাটিয়াগাছা গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামের পরিচিত তৃণমূল মুখ। ভেড়ি এলাকায় তৃণমূলের নির্মম দখলদারি ধরে রাখতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে পর্যন্ত আনসার ছিল তৃণমূল নেতা মতিয়ার সাঁপুইয়ের অব্যর্থ বাজি। আনসারির আরেক পরিচয়ও আকর্ষণীয়। গায়ের জোরে কীর্তিপুর-২নম্বর গ্রাম দখল করার পরে তৃণমূলী প্রধান হন সইদা বিবি। সইদা বিবির স্বামী আসরফ আলি বারাসতের ‘আরাবুল’ মতিয়ার সাঁপুইয়ের ডান হাত। এই সইদা বিবি ও আসরফ আলির আত্মীয় আনসার। জোর করে পঞ্চায়েত দখল করে আসরফ আলির হাতে তুলে দেওয়ার অন্যতম পাণ্ডা এই আনসার আলি মোল্লা। কামদুনির বাসিন্দাদের অভিযোগ, ক্ষমতাধর এই আনসারকে বাঁচাতেই এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে শাসক দল তৃণমূল। 

যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের উত্তাপ এখন ছড়িয়ে রয়েছে গোটা রাজ্যে, সেই উত্তাপ থেকে কামদুনিকে বঞ্চিত করার পাণ্ডাও এই আনসার। কিছুদিন আগে পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্ব শুরু হওয়ার আগেই এই আনসারের বাহিনী প্রকাশ্যে সশস্ত্র অবস্থায় দাপিয়ে বেড়িয়েছিল গোটা কামদুনি। সেই স্মৃতি এখনও ফিকে হয়নি কামদুনি ঘোষ পাড়া কিংবা নস্কর, কয়াল পাড়ায়। আনসারের প্রবল সশস্ত্র দাপটেই এই পঞ্চায়েতের ১১টি আসনে বিরোধীরা প্রার্থীই দিতে পারেনি। একটি আসনে দিতে পারলেও সি পি আই(এম)র সেই প্রার্থী এখনও ঘরছাড়া। এদিন কামদুনির স্কুল মাঠের সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঘোষপাড়ার এক যুবক বলছিলেন, ‘আনসাররা গোটা পঞ্চায়েত তৃণমূলকে জিতিয়ে দিয়েছে, আর তাই তৃণমূল এখন তাকে হয়তো বাঁচানোর চেষ্টা করছে’।

কিন্তু কেন এই অভিযোগ? কামদুনির বাসিন্দাদের কথায়, সি আই ডি যে চার্জশিট দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে একজন ব্যক্তিই অর্থাৎ সইফুল আলি নাকি দু-দুবার ধর্ষণ করেছে কলেজ পড়ুয়া ওই কিশোরীকে। এমনকি খুনও করে সইফুল। বাকি কাজে সাহায্য করে অন্যান্য অভিযুক্তরা। দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগকে লঘু করে দিতেই সি আই ডি এইভাবে চার্জশিট তৈরি করেছে বলে ইতোমধ্যেই অভিযোগ করেছে মৃতার ভাই। সাংবাদিকদের সামনেই প্রসেনজিৎ বলেছে, গ্রামের অনেকেই সেদিন ঐ পাঁচিল ঘেরা জায়গা থেকে আনসারকে বের হতে দেখেছিল। পরে তাকে জিজ্ঞাসা করেই তো আমরা বাকি তিনজনের নাম জানতে পেরেছিলাম। সেই নাম জানার পরেই আমরা থানায় এফ আই আর করেছিলাম। কিন্তু কামদুনির ওই কলেজ ছাত্রীর ভাইয়ের করা এফ আই আর-এ যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে মাত্র একজনের নাম রয়েছে সি আই ডি’র চার্জশিটে।

আর এই ঘটনাই নতুন করে ফের ক্ষুব্ধ করেছে কামদুনিকে। প্রকৃত বিচারের দাবিতে এবার বড় ধরনের আন্দোলনের পথে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কামদুনি।

- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43272#sthash.9ysDftv3.dpuf

ধর্ষিতাকে দিয়ে মিথ্যা বয়ান লেখালো পুলিস

নিজস্ব সংবাদদাতা


বর্ধমান, ৫ই জুলাই — বর্ধমান সদর থানার পুলিস আদিবাসী ধর্ষিতা মহিলাকে ভয় দেখিয়ে অসত্য কথা লিখিয়ে নিয়ে দোষীদের আড়াল করতে চেয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বর্ধমান সদর থানার ভিটে খরিদ্দা গ্রামে রাতে ওই মহিলা যখন রান্না করছিলেন তখন তাঁকে ৬জন দুষ্কৃতী চ্যাংদোলা করে বাড়ির পিছনে নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। তখন তাঁর স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। ছিল ছোট ছেলে-মেয়ে। তারপর ওই মহিলার দুটি পা ও দুটি হাত চার জন দুষ্কৃতী ধরে রাখে। অন্য দুষ্কৃতীরা তাঁর সাথে পাশবিক আচরণ করেছে বলে অভিযোগ। অবশ্য পুলিস অসত্য বয়ান লিখে স্রেফ শ্লীলতাহানির চেষ্টা বলে ওই আদিবাসী গৃহবধূকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পরে গ্রামের মানুষের কাছে তিনি বলেছেন, তাঁর উপর পাশবিক অত্যাচার হয়েছে। কিন্তু পুলিসের লেখা বয়ানে আছে ওই গৃহবধূকে চারজন মিলে ধরে রেখেছিল কিন্তু লাঞ্ছিত মহিলা তাঁদের হাত থেকে পালিয়ে এসেছেন! কেন তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা হলো না? বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখনো গুরুতর অসুস্থ ওই মহিলা। 

ওই লাঞ্ছিত মহিলা শুধু আদিবাসী গৃহবধূ নন, তিনি ছিলেন রায়ান-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্যা ও সি পি আই (এম) কর্মী। তাঁর উপর এই পাশবিক অত্যাচারের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার মানুষ। পুলিস একজন দুষ্কৃতীকেও ধরতে পারেনি। অথচ ওই দুষ্কৃতীরা আলো বন্ধ করে এই মহিলার উপর অত্যাচার করেছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিসের এই ভূমিকায় রীতিমত ক্ষুব্ধ রায়ান-২ পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ। তারা বলছেন, প্রকৃত নিরপেক্ষ তদন্ত হলে অপরাধী কারা তা জানা যাবে। কিন্তু পুলিস সেই পথে না হেঁটে শাসকদল ও অপরাধীদের আড়াল করতেই ব্যস্ত।

- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43271#sthash.sKtqGfGE.dpuf

PANCHAYAT ELECTIONS IN WEST BENGAL: ফের হাইকোর্টে নির্দেশ রাজ্যকে ভোটে অবাধ প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে

ফের হাইকোর্টে নির্দেশ রাজ্যকে ভোটে অবাধ প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে


নিজস্ব প্রতিনিধি


কলকাতা, ৫ ই জুলাই— আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থীদের বাধাহীন প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রচারে প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে। আদালত তার নির্দেশে বলেছে শনিবারই এব্যাপারে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে হবে সরকারকে। আদালত বলেছে কমিশনের সঙ্গে ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং পুলিসের ডি জি। আদালতের এই নির্দেশ পাবার পরই রাজ্য নির্বাচন কমিশন শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় প্রার্থীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠকের আয়োজন করেছে। রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া থেকে শুরু করে প্রচার প্রক্রিয়া চালানোর সময় আক্রান্ত হচ্ছেন বিরোধী দলের প্রার্থীরা। বহু পঞ্চায়েত এলাকায় বিরোধী দলের প্রার্থীদের খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বহু প্রার্থী ঘরছাড়া হয়ে আছেন। অনেক পঞ্চায়েত আছে যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা একতরফা প্রচার করছেন। সেখানে বিরোধী প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে দিয়ে প্রার্থীকে এলাকা ছাড়া করে দেওয়া হয়েছে। এই আক্রমণের বিরুদ্ধে ভোটে নির্বিঘ্নে প্রচার করতে চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ভাঙড়ের বোদরা গ্রাম পঞ্চায়েতের সি পি আই (এম) প্রার্থী মানোয়ারা বিবি। শুক্রবার বিচারপতি সঞ্জীব ব্যানার্জি মন্তব্য করেছেন নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে অবাধে ভোটের প্রচার করার ব্যবস্থা করা দরকার। এখন বিনা বাধায় প্রচার চালানোর পরিস্থিতি নেই। রাজ্য সরকারের উচিত বিনা বাধায় প্রার্থীদের প্রচারের ব্যবস্থা করা। তবে এব্যাপারে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের আলোচনা করে নেওয়া উচিত। তিনি শনিবার রাজ্য সরকারকে কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসার নির্দেশ দেন। এই সময় রাজ্য সরকারের আইনজীবী অশোক ব্যানার্জি আদালতে বলেন, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মামলা সুপ্রিম কোর্টে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। নির্বাচন কী ভাবে হবে তা সুপ্রিম কোর্টই বলে দিয়েছে। আবার মামলা কীসের? সরকারী আইনজীবীর এই বক্তব্যের পর বিচারপতি বলেন, রাজ্য পঞ্চায়েত প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে শনিবারই বৈঠক হবে। বৈঠকের পর নিরাপত্তার বিষয়টি কোন পর্যায়ে থাকলো তা আদালতকে ১০ জুলাই রাজ্য সরকার জানাবে।

প্রসঙ্গত গত ২৮ শে জুন পঞ্চায়েত নির্বাচনে হামলার মুখে প্রচার করতে পারছেন না বলে আদালতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন সি পি‌ আই (এম) প্রার্থী মানোয়ারা বিবি। আবেদনে তিনি বলেছিলেন প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য ক্রমশ চাপ বাড়ছে। তাঁকে খুন করার হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রার্থীদের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে মামলা করেছিল প্রদেশ কংগ্রেসও।এই দুটি আবেদনের একসঙ্গে শুনানি গ্রহণ করেছে আদালত। 

মানোয়ারা বিবির সঙ্গে রয়েছেন আর এক সি পি আই (এম) প্রার্থী মাজেদা বিবি। তাঁরও একই অভিযোগ। এঁরা দু জনেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এক নম্বর ব্লকের বোদরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী। মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা ভাঙড়ে সি পি আই (এম) প্রার্থীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। মানোয়ারা বিবি এবং মাজেদা বিবির ঘরবাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। এই দুই প্রার্থী এখন নিজের ঘরে থাকতে পারছেন না। ভাঙড়ের এই অঞ্চলের ৩২ জন সি পি আই (এম) প্রার্থীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এবং মারধর করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানো হয়েছে। ইতোমধ্যেই হিংসা ছড়িয়ে ৬২৪৭টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা। এই জয়ীদের মধ্যে রয়েছেন ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। এখনও প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য রাজ্যজুড়ে হিংসা চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে ভোটের লড়াইয়ে প্রচার করতে চেয়ে আদালতে মামলা শুরু হয়েছে। আবেদনকারীর পক্ষে আদালতে রয়েছেন আইনজীবী রবিশঙ্কর চ্যাটার্জি, উদয়শঙ্কর চ্যাটার্জি, সুমন চ্যাটার্জি।

- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43270#sthash.9oV6JQ9E.dpuf

PANCHAYAT ELECTIONS IN WEST BENGAL: পুলিসকে নিরপেক্ষ হতে নির্দেশ কমিশনের নিয়মের ফাঁকে অর্ধেক বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না

পুলিসকে নিরপেক্ষ হতে নির্দেশ কমিশনের নিয়মের ফাঁকে অর্ধেক বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না


নিজস্ব প্রতিনিধি


কলকাতা, ৫ই জুলাই — গোটা রাজ্যে প্রায় অর্ধেক বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। ১৭টি জেলায় ৫৭,২৩৩‍‌টি বুথের মধ্যে ২৭,৪৭৩টি এমন বুথ রয়েছে যেগুলি একটি বাড়ি বা চত্বরে একটাই বুথ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের যা বিধি রয়েছে তাতে ভোটের কাজে ‍‌ কোথাও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হলে অর্ধেক সেকশনের কমে করা যাবে না। এক সেকশন বাহিনী বলতে ৭জন জওয়ান বোঝায়। অর্থাৎ বুথে কোথাও কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখতে গেলে ৩ থেকে ৪ জন জওয়ানকে রাখতেই হবে সেই চত্বরে। যার অর্থ দাঁড়ায় রাজ্যে প্রায় অর্ধেক বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করাই যাচ্ছে না। এই অর্ধেক বুথে ভোটের পুরো দায়িত্বই থাকবে রাজ্য পুলিসের। শুক্রবার রাতে কমিশনের সচিব তাপস রায় বলেন, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স হলো কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল এজেন্সি। এছাড়াও রেল সুরক্ষা বাহিনী, সীমা সুরক্ষা বাহিনী, সি আই এস এফ থেকে ফোর্স আসছে। ইতোমধ্যেই কমিশনের দপ্তরে বি এস এফ-এর আই জি এ কে শর্মার সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী তাঁদের নিয়ম কানুনের বাইরে কাজ করবে না। ফলে রাজ্যের প্রায় অর্ধেক বুথে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে না তা এদিন স্বীকার করে নেয় কমিশন। ১১ তারিখ প্রথম দফায় জঙ্গল মহলের তিন জেলা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ভোট গ্রহণ। প্রথম দফায় তিন জেলায় মোট বুথের সংখ্যা ১০,০৩৮টি। কেন্দ্রীয় বিধি নিষেধের বেড়াজালে এই পরিস্থিতি ‍‌তৈরি হয়েছে যে তারমধ্যে ৭৩৪২টি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সম্ভাবনা প্রায় নেই। এইরকম বুথ বাঁকুড়াতে রয়েছে ২১০৬টি, পুরু‍‌লিয়াতে ১৫৭৬টি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে আছে ৩৬৬০টি। প্রথম দফায় ১৫ হাজার থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী আর রাজ্যের সশস্ত্র পুলিস ৩৫ হাজার। কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী প্রথম দফায় তিন জেলায় দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি বুথে নিরাপত্তার দায়িত্বে রাজ্য পুলিসই থাকছে।

এদিকে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে। এই বৈঠকে ভোটের সময় সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টার পরিবর্তে এক ঘণ্টা এগিয়ে এনে সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত করার প্রসঙ্গটি ফের একবার তুলতে পারে বাম দলগুলি। রাজ্য বামফ্রন্টের পক্ষে ইতোমধ্যেই কমিশনের কাছে এই দাবি করা হয়েছে। ভরা বর্ষা এবং রমজান মাসের দিকে তাকিয়ে ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা এ‍‌গিয়ে আনলে সকলেরই সুবিধা হবে বলে মনে করে বামফ্রন্ট। এদিন কমিশনের দপ্তরে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফার ৯টি জেলার জেলাশাসক এবং পুলিস সুপারদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয় কমিশন কর্তাদের। আলোচনার মূল বিষয় ছিল প্রচার পর্ব থে‍‌কে ভোট গ্রহণ এবং গণনা কেন্দ্রের নিরাপত্তা। এছাড়া আলোচনা হয়েছে ভোটের প্রস্তুতি এবং অতি বৃষ্টি ও বর্ষায় যাবতীয় ব্যবস্থাপনা নিয়ে। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে জেলা পুলিস সুপারদের বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। নির্বাচন কমিশনার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে যে খবর আসছে পুলিস রি‍‌পোর্টে তার কোন উল্লেখ থাকছে না। অথচ কমিশন অন্যান্য সূত্রে খোঁজ খবর নিয়ে দেখছে সংশ্লিষ্ট ঘটনাটি ঘটেছিল। ফলে নিরপেক্ষ ভাবে এসব প্রশ্নে পুলিস সুপারদের আরো সতর্ক হয়ে চলার কথা বলেন মীরা পাণ্ডে। এদিন বৈঠকে ঠিক হয়েছে অতি দ্রুত সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং ভোটারদের মধ্যে ভয়ভীতি কাটানোর যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে প্রশাসন। এ বিষয়ে জেলাশাসক, জেলা পুলিস সুপার এবং জেলা পর্যবেক্ষক এই তিনজন মিলে ‍এরিয়া ডমিনেশনের পরিকল্পনা করবেন। ৮ই জুলাই প্রথম দফায় তিন জেলায় ১৫ হাজার কেন্দ্রীয় ‍‌বাহিনী এবং ৩৫ হাজার রাজ্যের সশস্ত্র পুলিস পৌঁছে যাবে। তিন জেলায় এই ৫০ হাজার বাহিনীকে কীভাবে ব্যবহার করা হবে তা পর্যবেক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করে জেলা প্রশাসন ঠিক করবে। প্রথম দফায় ১০,০৩৮টি বুথের মধ্যে অতি স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ৭ হাজারের কিছু বেশি।

- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43258#sthash.fYCxSFSr.dpuf

NREGA IN WEST BENGAL: রেগায় ব্যর্থতায় সামনের সারিতে পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি নস্যাৎ কেন্দ্রের রিপোর্টে

রেগায় ব্যর্থতায় সামনের সারিতে পশ্চিমবঙ্গ 
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি নস্যাৎ কেন্দ্রের রিপোর্টে

নিজস্ব প্রতিনিধি

কলকাতা, ৫ই জুলাই— বিভিন্ন রাজ্যে গ্রামবাসীদের কত অংশ একশো দিনের কাজের প্রকল্পে একশো দিনই কাজ পেয়েছেন? খতিয়ে দেখেছিল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রক। সমীক্ষার রিপোর্ট জানাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ সেই তালিকায় পঁচিশ নম্বরে জায়গা পেয়েছে। এখানে মমতা ব্যানার্জির মুখ্যমন্ত্রিত্ব, ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে মাত্র ৪ শতাংশ মানুষ রেগায় একশো দিন কাজ পেয়েছেন। 

দেশে ২৮টি রাজ্য। একশো দিনে একশো দিনই কাজ পাওয়া পরিবারের সংখ্যার হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে বাইশ নম্বরে। রাজ্যের পিছনে শুধু অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, গোয়া, মণিপুর, পাঞ্জাব আর উত্তর প্রদেশ। 

সেই রিপোর্ট পৌঁছেছে রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন দপ্তরেও। সেই রিপোর্ট জানাচ্ছে, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে এই ২৮টি রাজ্যের কাজের হাল খতিয়ে দেখতে জুনের মাঝামাঝি রাজ্যগুলির গ্রামোন্নয়ন সচিবদের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে বৈঠকে বসেছিল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রক। পশ্চিমবঙ্গে রেগার কাজ নিয়ে গত কয়েক মাসে একাধিক সভায় নিজের সরকারের বিরাট সাফল্য দাবি করেছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু তাঁর সরকারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যে রিপোর্ট জয়রাম রমেশের মন্ত্রক তৈরি করেছে, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি নস্যাৎ হয়ে গেছে।

স্বাভাবিকভাবেই পনেরো দিনের কম কাজ পেয়েছেন গ্রামবাসীদের কত অংশ, তারও একটি তালিকা বানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থাৎ এটি এক অর্থে ফেল করা পড়ুয়াদের বা একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ব্যর্থতার তালিকা। সেখানে আবার পশ্চিমবঙ্গ সামনের সারিতে। দেশের আঠাশটি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে ছয় নম্বরে। এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের আগে আছে পাঁচটি রাজ্য। সেগুলি হলো, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, গোয়া, পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ। পশ্চিমবঙ্গে যে গ্রামবাসীরা এই প্রকল্পে কিছু না কিছু কাজ পেয়েছেন, তাঁদের ৩০ শতাংশ পনেরো দিনেরও কম কাজ পেয়েছেন রেগায়। 

রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক বিন্যাসের নিরিখে উল্লেখযোগ্য দু’টি জেলা হলো দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর। এই দু’টি জেলায় গত পাঁচ বছর জেলা পরিষদ পরিচালনা করছে রাজ্যের বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এই দু’টি জেলার ক্ষেত্রে জেলা পরিষদের কাজে জেলাশাসক বা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ অনেকটাই কম। অথচ রেগায় এই জেলা দু’টির ভূমিকা মোটেই সন্তোষজনক নয়। ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রেগায় কাজ পেয়েছে ২ লক্ষ ৪৮ হাজার ৯৫৭টি পরিবার। তাদের মধ্যে ৫৭ হাজার ২৮৯টি পরিবার কাজ পেয়েছে ১৫ দিনের কম। অর্থাৎ মোট কাজ পাওয়া পরিবারের ২৩ শতাংশেরও বেশি কাজ পেয়েছে ১৫ দিনের কম। পূর্ব মেদিনীপুরে ১৫ দিনের কম কাজ পাওয়া পরিবার প্রায় ২৫ শতাংশ। এই জেলায় রেগায় কাজ পেয়েছে ৪ লক্ষ ১৭ হাজার ৩০৫টি পরিবার। তারমধ্যে ১৫ দিনের কম কাজ পাওয়া পরিবার ১ লক্ষ ১ হাজার ১৫৬টি। 

একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ হলো গড় কাজের দিন। অর্থাৎ গ্রামবাসীদের গড়ে কতদিন করে কাজ দেওয়া গেলো। পশ্চিমবঙ্গে ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে গ্রামবাসীরা গড়ে কাজ পেয়েছেন ৩৪.৬৩ দিন। এই ক্ষেত্রে জাতীয় গড় প্রায় ৪৬ দিন। গড় কাজের দিনের নিরিখে দেশের আঠাশটি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে ২৩ নম্বরে। পশ্চিমবঙ্গের পিছনে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ (২৬.৬১ দিন), আসাম (২৫.৪৭ দিন), গোয়া (১৩.১৩দিন), পাঞ্জাব (২৭.২৭ দিন) এবং উত্তর প্রদেশ (২৮.৪৬ দিন)। দেশে গড়ের কাজের দিনে শীর্ষে রয়েছে মিজোরাম (৮৭.৮১দিন) এবং দ্বিতীয় স্থানে ত্রিপুরা (৮৬.৯২ দিন)।

রাজ্যের এই ব্যর্থতা অবশ্য মানতে চাননি গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি। শনিবার তিনি শুরু করছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার। প্রথমেই যাচ্ছেন বাঁকুড়ায়। শুক্রবার মহাকরণ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে বললেন, ‘‘আমরা অনেকটাই উন্নতি করেছি। মুখ্যমন্ত্রী অনেকবার বলেছেন। আমিও বলি, মনে রাখবেন, আমরা যত শ্রমদিবস সৃষ্টি করবো বলেছিলাম, তার থেকে বেশি করেছি। লক্ষমাত্রার ১১০ শতাংশ অগ্রগতি আমাদের। প্রথমবার। দেশেও প্রথম।’’

না, বাস্তবে কোনোটিই নয়। বছরের গোড়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে রাজ্যগুলি ঠিক করে, সেই বছর কত শ্রমদিবস তৈরি করা হবে। কাজের চাহিদার পরিমাপ করেই তা ঠিক হয়। পশ্চিমবঙ্গে ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে শ্রমদিবস তৈরির লক্ষমাত্রা ঠিক হয়েছিল ১৮৩৩ লক্ষের বেশি। শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে তার বেশি, প্রায় ১১০ শতাংশ, সন্দেহ নেই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এটি প্রথম নয়। ২০০৮-০৯ আর্থিক বছরে শ্রমদিবস তৈরি হয়েছিল লক্ষমাত্রার ৩০০ শতাংশ বা তিনগুণের বেশি। দ্বিতীয়ত, ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে কেরালা, তামিলনাডু, অরুণাচল প্রদেশ, হরিয়ানা লক্ষমাত্রার একশো ভাগের বেশি শ্রমদিবস সৃষ্টি করেছে। অরুণাচলে আবার বৃদ্ধির হার প্রায় ৫৪৮ শতাংশ। 

শ্রমদিবসের কত অংশের অধিকারী মহিলারা? তাও‍‌ খতিয়ে দেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা। আশা করা গিয়েছিল, এক্ষেত্রে ফল ভালো হবে। কিন্তু হয়নি। মণিপুরের সঙ্গে যৌথভাবে দেশের আঠাশটি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান হয়েছে ১৯ নম্বরে। এই ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে কেরালা। সেখানে ৯৩ শতাংশ শ্রমদিবসই মহিলারা তৈরি করেছেন। এই রাজ্যে মোট শ্রমদিবসের ৩৪ শতাংশ মহিলারা তৈরি করেছেন।

- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43273#sthash.HCKBOm1b.dpuf