Saturday, July 6, 2013

NATURAL GAS: অভ্যন্তরীণ প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ কার পক্ষে সরকার, দেশের না কর্পোরেট জগতের?

নিশীথ চৌধুরী


দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। ২৭শে জুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০১৪-র ১লা এপ্রিল থেকে দেশে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম হবে প্রতি মিলিয়ন বি টি ইউ প্রতি ৮.৪ ডলার, বর্তমানের দাম ৪.২ ডলারের একেবারে দ্বিগুণ। বিষয়টা নিয়ে যে তোলপাড় হবার কথা ছিল এখনও পর্যন্ত তা কিন্তু আমাদের নজরে আসেনি। আমাদের রাজ্যের বাণিজ্যিক সংবাদপত্রে সম্পাদকীয় তো দূরের কথা, খবরটা পর্যন্ত তেমন গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়নি।

সি পি আই (এম)এবংবামপন্থী দলগুলি মূল্যবৃদ্ধির সুদূরপ্রসারী ফলাফল সম্বন্ধে বেশ কয়েকবছর ধরেই ধারাবাহিকভাবে বলে আসছে। বাম সাংসদরা প্রধানমন্ত্রী তথা পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকে বারে বারে চিঠি দিয়েছেন। সংসদে এ বিষয়ে বক্তব্য রেখেছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে বামদলগুলির যৌথ বিবৃতিও নজরে এসেছে। গত ২রা জুলাই সাংসদ ও সি আই টি ইউ-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তপন সেন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সংসদের উভয় কক্ষে এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা চেয়েছেন।

প্রাক্‌ কথন

দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম কি হবে — বিষয়টা আলোচনায় আসতই না যদি না সরকারের উদার নীতির দাপটে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলন ও বিপণনের দরজা দেশী বিদেশী পূঁজিপতিদের জন্য খুলে দেওয়া হতো। এই সে দিন পর্যন্ত প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ও বিপণনের সমস্তটাই ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের অধীন। রাষ্ট্রায়ত্ত ONGC এবং Oil India ছিল গ্যাস খনন ও উৎপাদনের দায়িত্বে। ১৯৮৪ সালে ‘জাতীয় গ্যাস গ্রিড’ তৈরির মাধ্যমে দেশের সর্বত্র প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হলো GAIL । ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এই ব্যবস্থাই চলছিল। স্বাধীনতা লাভের পূর্ববর্তী সময়ে শুধুমাত্র আসাম ও গুজরাটে তৈল ও গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। ৬০এর দশকের শেষের দিকে বোম্বে হাই-এ গ্যাস ও তেল আবিষ্কৃত হয়, ৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে তার উত্তোলন শুরু হয়। এর পর ৮০-র দশকের মাঝামাঝি সময়ে বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী কৃষ্ণা-গোদাবরী বেসিনের ৫০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের বিরাট ভাণ্ডার খুঁজে পায় ONGC-র বিজ্ঞানীরা।

১৯৯০ সালের সালের প্রথম দিকে দেশে শুরু হলো অর্থনৈতিক সংস্কারের কর্মসূচী। গ্যাস উত্তোলনের ক্ষেত্র বেসরকারী বিনিয়োগের জন্য খুলে দেওয়া হলো। ১৯৯৯ সালে ভারত সরকার গ্রহণ করল New Exploration Licensing Plan বা NELP এবং প্রথম রাউন্ডেই KG বেসিন তুলে দেওয়া হলো রিলায়েন্সের হাতে। ২০০০ সালের এপ্রিল মাসে ভারত সরকার ও অবিভক্ত RIL-এর মধ্যে KG বেসিনের ৩৩৯.৪১ বর্গ কি‍‌লোমিটার জায়গা জুড়ে গ্যাস উত্তোলনের জন্য Production Sharing Contract স্বাক্ষর হলো। অনুরূপভাবে প্রায় একই সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আবিষ্কৃত ক্ষেত্রে কোল-বেড-মিথেন উত্তোলনের দায়িত্ব চলে গেল গ্রেট ইস্টার্ন এনার্জি কর্পোরেশন, এসার অয়েল এবং রিলায়েন্স গোষ্ঠীর হাতে। ইতোমধ্যে দামোদর বেসিন তথা দেশের আরও অনেক অঞ্চলে আবিষ্কৃত সেল-গ্যাস উত্তোলন ও বিপণনের দায়িত্বও দ্রুত কোনো কর্পোরেট হাউসের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

এই ক্ষেত্রে ব্যক্তিপুঁজির অনুপ্রবেশের ফলশ্রুতিতে শুরু হলো প্রাকৃতিক গ্যাসের দু-ধরনের দাম। KG বেসিন গ্যাসের উৎপাদন ও বিপণন শুরু হয় ২০০৯ সালে। এর আগে গ্যাসের মূল্য নির্ধারিত হতো প্রশাসনিক মূল্য পদ্ধতি (Administrative Price Mechanism বা APM) এর মাধ্যমে আসল উৎপাদন খরচ ও যুক্তিসঙ্গত মুনাফার হিসেব কষে। তখন প্রাকৃতিক গ্যাসের সরকার নির্ধারিত মূল্য ইউনিট (মিলিয়ান BTU) প্রতি ১.৮৩ ডলার দামে রাষ্ট্রায়ত সংস্থা ONGC’র মাধ্যমে বিপণন করা হতো। কিন্তু যুক্তিসঙ্গত মুনাফায় তো ঐ সমস্ত বৃহৎ পুঁজির তৃষ্ণা মেটাতে পারবে না। তাই সরকার নির্ধারিত দামের বাইরে সরকারই অনুমোদন দিল আরেক রকমের দামের, ইউনিট প্রতি ২.৩৪ ডলার এবং জুন ২০০৪ সালে RIL মিনিরত্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা NTPC-কে ২.৩৪ ডলারে পরবর্তী ১৭ বছর ধরে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বরাত পেল। রিলায়েন্স তখনও গ্যাস উৎপাদন শুরু করেনি। ২০০৬ সাল থেকেই তারা সরকারের কাছে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ৪.৩৩ ডলার করার জন্য তদবির তদারকি শুরু করে দিল, আর ৯—১০ মাসের প্রচেষ্টায় তারা সফলতাও পেল। ১২.০৯.২০০৭ তারিখে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন মন্ত্রীদের একটি গোষ্ঠী ঐ গ্যাসের মূল্য ইউনিট প্রতি ৪.২ ডলারের অনুমোদনও দিয়ে দিল। মনে রাখতে হবে তখন ’র গ্যাসের দাম ছিল ১.৮৩ ডলার। আরও আশ্চর্যের বিষয়, ২০০৭ সালে, KG বেসিন থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু হবার ২ বছর আগেই অস্বাভাবিক তৎপরতায় দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রিগোষ্ঠী রিলায়েন্সের আবদার মেনে নিল। এর পর ২০০৯ সালে কে জি বেসিনে গ্যাস উৎপাদন শুরু হবার কিছু সময়ের মধ্যেই আবার নতুন আবদার, এ দামে চলবে না, আন্তর্জাতিক বাজারে যে মূল্যে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) পাওয়া যায়, সেই দামের সমান মূল্য দেশে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্যও নির্ধারিত করতে হবে। এই দাবি স্বাভাবিক কারণেই পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস দপ্তরের তদানীন্তন ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী জয়পাল রেড্ডি অগ্রাহ্য করেন। শুরু হলো নানা ছলচাতুরি, গ্যাসের উৎপাদন তারা নানা অছিলায় কমাতে লাগল। যেখানে ২০১২-১৩ সালে গ্যাসের উৎপাদন হবার কথা দৈনিক ৮০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার তা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্যই যান্ত্রিক ত্রুটির দোহাই দিয়ে কমিয়ে আনা হয়েছে ১৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটারে। এতই ক্ষমতা তাদের যে দাবির প্রতি সহমত না হবার কারণে তারা মন্ত্রীও বদল করে দিতে পারে। সম্প্রতি ক্যাবিনেট বদলের সময় জয়পাল রেড্ডির দপ্তর বদল করা হলো। এটা সবাই বলছে রিলায়েন্সের বিরোধিতা করার মূল্য দিতে হলো তাঁকে।

রঙ্গরাজন কমিটির সুপারিশ ও সরকারের অবস্থান

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটির প্রধান ডঃ সি. রঙ্গরাজনের নেতৃত্বে অভ্যন্তরীণ গ্যাস উৎপাদনের জন্য ভবিষ্যৎ Production Sharing Contract-এর রূপরেখা এবং উৎপাদিত গ্যাসের মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতির বিষয়ে সুপারিশ করার জন্য গঠিত কমিটি তাদের রিপোর্ট পেশ করেছে এবং তা এ বছর জানুয়ারি মাসে ওয়েব সাইটে দিয়ে দেওয়াও হয়েছে। সুপারিশ যথারীতি রিলায়েন্সের অনুকূলেই গেছে এবং সরকারও অতি দ্রুততার সাথে মন্ত্রিসভার অভ্যন্তরীণ বিরোধ সহ সর্বস্তরের বিরোধিতাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সে সুপারিশ মেনে তা আগামী ১লা এপ্রিল ২০১৪ থেকে লাগু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল। এই মুহূর্তে দেশে APM গ্যাসের দাম স্থানভেদে ইউনিট পিছু ২.৫২ ডলার থেকে ৪.২ ডলার এবং Non APM গ্যাসের মূল্য ৪.২ থেকে ৫.২৫ ডলার। ১লা এপ্রিল ২০১৪ থেকে আর দু ধরনের দাম থাকবে না, সব গ্যাসের দাম হবে সমান, ইউনিট পিছু ৮.৪ ডলার।

এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলশ্রুতিতে কি ঘটতে চলেছে? দিল্লির খবরের কাগজেই এসেছে ক্যাবিনেট মিটিং-এ সার ও বিদ্যুৎমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে গ্যাসের মূল্য ৮.৪ ডলার করার ফলে ইউরিয়া সারের উৎপাদন খরচ বাড়বে টন পিছু ৬০০০ টাকা আর বিদ্যুতের দাম বাড়বে ইউনিট পিছু ২ টাকা হারে। দাম বাড়বে রান্নার গ্যাসের এবং CNG-র ফলশ্রুতিতে রান্নাঘরে আগুন আর বর্ধিত পরিবহন খরচ। আর এ সবের সামগ্রিক ফল একটাই-যাবতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি।

সরকারের যুক্তি অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ টানতে অভ্যন্তরীণ গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধি সাহায্য করবে এবং কালক্রমে অভ্যন্তরীণ গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG)’র আমদানি কমে আসবে। দুর্ভাগ্যক্রমে এ যুক্তির পুরোটাই অসার। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে দেশে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ইউনিট পিছু ১.৭৯ ডলার থেকে ৩০০ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫.২৫ ডলার। কই, নতুন কোন বিনিয়োগ আসেনি তো? সাংসদ তপন সেন তাঁর প্রধানমন্ত্রীকে লেখা সাম্প্রতিক চিঠিতে সঠিকভাবেই বলেছেন দেশে পেট্রোলিয়াম ক্ষেত্রে ইমপোর্ট প্যারিটি প্রাইস চলছে দীর্ঘদিন ধরে কিন্তু এর ফলে না বেড়েছে অভ্যন্তরীণ খনিজ তেলের উৎপাদন, না এসেছে কোন বিদেশী বিনিয়োগ। তা হলে গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধিতে বিনিয়োগ আসবে তার গ্যারেন্টিই বা কোথায়?

সরকার আরও যুক্তি দিয়েছে যে, গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধির বেশির ভাগ সুবিধাটাই পা‍‌বে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র কারণ বর্তমানে গ্যাস উৎপাদনের দুই-তৃতীয়াংশই রাষ্ট্রায়ত্ত ONGC এবং Oil India’র অধীন। আবার একটা অসার যুক্তি। মনে রাখতে হবে গ্যাসের উপভোক্তাওতো প্রধানত রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র। একটা হিসাব বলছে (Frontline পত্রিকার ২৬শে জুন সংখ্যায় C P Chandrasekhar-এর লেখা প্রবন্ধ) ইউনিট পিছু ১ ডলার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের বর্তমান ইউরিয়া উৎপাদনের খরচ বাড়বে বাৎসরিক ৩০০০ থেকে ৪০০০ কোটি টাকা আর গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বাড়বে বাৎসরিক ১০ হাজার কোটি টাকা। এসব কারখানার অধিকাংশই তো রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে আর এর দাম তো বকলমে রাষ্ট্রকেই মেটাতে হবে। তা হলে কোথায় রইল রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের মুনাফা? মুনাফাতো করবে রিলায়েন্স ও অন্যান্য কর্পোরেট হাউস। New Exploration Licensing plan লাগু হবার পর থেকে কোন্‌ কর্পোরেট হাউস তেল বা গ্যাসের মুনাফার কত অংশ সরকারী কোষাগারে জমা করেছে এ হিসাব তো আজও সকলের অজানা।

তপন সেন তাঁর চিঠিতে আরও জানতে চেয়েছেন সরকার কি এমন একটা দেশের নাম করতে পারবে যেখানে অভ্যন্তরীণ উৎপাদিত গ্যাসের দাম ৮.৪ ডলার বা তার কাছাকাছি। সারা পৃথিবীতে এ এক বেনজির উদাহরণ। ভারতবর্ষে যেখানে এই দাম করা হচ্ছে প্রতি মিলিয়ান বি টি ইউ পিছু ৮.৪ ডলার সেখানে খোদ আমেরিকায় এর মূল্য ৩.৮ ডলার, ওমানে ২.২ ডলার, কাতারে ২.৫ ডলার, কানাডায় ৩.৮ ডলার, আবুধাবিতে ২.৩ ডলার, মালয়েশিয়ায় ৪ ডলার আর আমাদের প্রতিবেশী বাংলাদেশে তা ৩.৫ ডলার মাত্র। (উৎস: Outlook পত্রিকা জুলাই ৮, ২০১৩)।

বেসরকারী পুঁজির সেবায়

আর কোন ঢাকা-ঢুকি নেই, সরকারটা সরাসরি নেমে পড়েছে বেসরকারী পুঁজির সেবায়। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রেভিনিউ সচিব ই এ এস শর্মা সম্প্রতি বলেছেন, ‘এ তো খরচের সামাজিকীকরণ আর মুনাফার বেসরকারীকরণ’। আগেই বলা হয়েছে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়তে চলেছে সারের মূল্যে, বিদ্যুতের দামে আর রান্নার গ্যাস তথা পরিবহনে ব্যবহৃত CNG-তে। এ সবের মূল্য বর্তমানের অবস্থায় রাখতে গেলে শুধুমাত্র সার ও বিদ্যুতেই পরবর্তী ৫ বছরে অতিরিক্ত ভরতুকি দিতে হবে ৭১,২৫০ কোটি টাকা। এই সরকার যারা সর্বজনীন খাদ্য সুরক্ষার প্রশ্নে আর্থিক অনটনের দোহাই দেয়, তারাই রিলায়েন্সের মতো কর্পোরেট হাউসের মুনাফা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্রীয় কোষাগার খালি করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না।

জনগণের জন্য ভরতুকি কথাটাতো একটা অতি ঘৃণিত শব্দ। বর্তমান নীতির প্রকোপেই অদূর ভবিষ্যতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে ভরতুকি কমানোর কথা। সব দিক থেকেই বিপদে পড়বে সাধারণ মানুষ। কি হবে দেশের ৭৯ শতাংশের বেশি মানুষের যারা দৈনিক ২০ টাকাও খরচ করার সামর্থ্য রাখেন না?

সংবিধানের ২৯৭ ধারা অনুসারে দেশের অভ্যন্তরে মাটির তলায় অথবা আন্তর্জাতিক সীমারেখার অভ্যন্তরে সমুদ্রের তলায় খনিজ অবস্থায় থাকা প্রাকৃতিক গ্যাস সহ সব ধরনের পেট্রোলিয়াম পদার্থের মালিকানা ভারত সরকারের এবং তা দেশের প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হবে। গত ১লা জুলাই ২০১৩ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বামদলগুলির জাতীয় কনভেনশনের প্রস্তাবেও সমস্ত খনিজসম্পদের জাতীয়করণের দাবি স্বীকৃত হয়েছে। জনগণের সম্পত্তির এভাবে বেপরোয়া লুটের ব্যবস্থা পাকা করতে যে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও সরকার বদ্ধপরিকর তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া এই মুহূর্তে আর কোন বিকল্প নেই।
- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43263#sthash.4hpdlDe7.dpuf

No comments:

Post a Comment